হুমায়ুন
কবির, গাজীপুর প্রতিনিধি,
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আনন্দে জাতি আজ উদ্বেলিত, তাদের আনন্দ ম্লান করে
আশঙ্কার দিকে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী ডা.
দীপুমনি বলেছেন, শিক্ষাঙ্গনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল। আজ হঠাৎ করে উত্তাপ
ছড়াবার একটি অপচেষ্টা হচ্ছে। যখন আরেকটি ৭৫ ঘটানোর হুমকি দেয়া হয়, তখন তার
মানে হচ্ছে সেই ৭১ এর পরাজিত শক্তি, ৭৫ এর হত্যাকারী, ২০০৪ এর গ্রেনেড
হামলাকারী, ২০১৪ এর অগ্নি সন্ত্রাসী, তারাই আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবার
চেষ্টা করছে। তারা জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং স্বপ্নের পদ্মা সেতুর
উদ্বোধনের আগ মুহুর্তে এই যে একটি পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে
এবং ঘৃন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে যা কোন রাজনীতির অংশ হতে পারে না, এটি
সন্ত্রাসী ভাষা। এটি সন্ত্রাসী ও হত্যাকারীর ভাষা। আজকে শিক্ষাঙ্গনকে
অস্থিতিশীল করার যে অপচেষ্টা সেটি সেই ঘৃণ্য অপচেষ্টার অংশ। হত্যাকারীরাই
আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবার চেষ্টা করছে।
তিনি বুধবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির
নবীন বরণ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক উদ্ভাবিত ব্লেন্ডেড লার্নিং সল্যুশনের
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু
হাইটেক সিটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওই ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা
ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ
হোসেন, ওই ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আশরাফ উদ্দিন। এসময়
ইপস্থিত ছিলেন- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) জামাল হোসেন, গাজীপুরের
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মোঃ সালাহ উদ্দিন, কালিয়াকৈর থানার তদন্ত ওসি
আবুল বাশার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল,
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থীরা।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যমুনা ও পদ্মা নদীর উপরে সেতু
নির্মানের কথা বলেছিলেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রের মাধমে উনাকে হত্যা করলেও তাঁর
সুযোগ্য কন্য দেশ নায়ক থেমে থাকেননি। তিনি যমুনা সেতু করেছেন। এরপর
দেশি-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে পদ্মা সেতু করেছেন। ১৫ বছর আগেও যখন
গ্রামে যেতাম, অনেক সময় নিয়ে গ্রামে পৌছতে হতো। কিন্ত দেশ নায়ক শেখ হাসিনা
ব্যাপক উন্নয়নের ফলে এখন সেই গ্রামে পৌছতে বেশি সময় লাগে না। দিন গিয়ে দিন
ফিরে আসা যায়। শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
নেতৃত্বে সকল সেক্টরের উন্নয়নের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কৃষিতে দেশের শতভাগ প্রয়োজন মিটিয়ে আমাদের কৃষি পন্য
অন্য দেশে রপ্তানি করতে পারছি। এটা দেশ নায়ক শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের
কারনেই সম্ভব হয়েছে। সব মিলিয়ে আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। আর এসব
উন্নয়নে ভুমিকা রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পল্লী উন্নয়ন পদকে ভুষিত
করা হয়েছে। কাউকে বাধা দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়ে মানে প্রান্তিক মানুষকে
প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের মুল ধারায় নিয়ে আসছেন।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যে ভাবনা সেটা খুব স্পষ্ট ছিল। যিনি
স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তাঁর যে
স্বপ্ন, তাঁর যে সংগ্রাম, তাঁর যে ত্যাগ তাঁর সব কিছুর মধ্য দিয়ে তিনি
বাঙ্গালীকে স্বাধীন রাষ্ট্রটি দিয়ে গেছেন। সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
বলেছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়বার মুল হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষা। এ জন্য
স্বার্বজনিন বাধ্যতা মুলক প্রাথমিক শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, বিঞ্জান মনোষ্ক
জাতি গড়ে তোলতে হবে এবং প্রযুক্তি বান্ধব জাতি গড়ে তোলতে হবে। দারিদ্র
কখনোই যেন মেধাবী শিক্ষার্থীও উচ্চ শিক্ষার পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। সেই
লক্ষ্যে তাঁর সুযোগ্য কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম
বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে,
বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের শিক্ষাকার্যক্রম পরিবর্তন
করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, তরুণরাই পারবে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বাধীন বাংলাদেশকে সোনার
বাংলায় পরিণত করতে। সেই তরুণদেরকে আমাদের ক্ষমতায়িত করে তাদের উপযুক্ত
শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। তরুণরা যেন বাংলাদেশকে সামনের দিকে
এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সেজন্য তথ্য প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের অবাদ সুযোগ করে
দিতে হবে। তরুণরা শুধু নিজেদের কাজের এবং চাকুরীর জন্য তৈরি করবে তা নয়।
তারা উদ্যোক্তা হয়ে আরও বহু মানুষের চাকুরীর ব্যবস্থা করবে।তেমন করেই তাদের
তৈরি করার স্বপ্ন দেখেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং সেই
পরিবেশটি তৈরিও করেছেন।
0 Comments
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন